Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে মহান বিজয় দিবস ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন, বিজয়ের গান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন।


প্রকাশন তারিখ : 2019-12-16

      

মহান বিজয় দিবস ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন, বিজয়ের গান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে জাদুঘরে সংগৃহীত মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন নিয়ে ১৬ দিনব্যাপী বিশেষ প্রদর্শনির উদ্বোধন এবং জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফোকলোরবিদ ও বঙ্গবন্ধু চেয়ার, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব হারুন হাবীব। সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব ম. হামিদ, শহীদ জায়া ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি জনাব শাহরিয়ার কবির।

স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মো. রিয়াজ আহম্মদ বলেন, আজ ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির জীবনে এক পরমানন্দের দিন, শৃঙ্খল ভাঙার দিন, স্বাধীন আকাশে মুক্ত পাখির মতো উড়ে বেড়াবার দিন। আজকে স্বাধীনতার এই দিনে দাড়িয়ে স্মরণ করছি আমাদের আত্নত্যাগী ভাইবোনদের যাদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভূমি। প্রতি বছরের মত এবছরও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করছে। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই আমাদের এই মহৎ আয়োজনের মুখ্য উদ্দেশ্য।

প্রধান বক্তা জনাব হারুন হাবীব বলেন, বিজয়ের ৪৮ বছর পরও বাংলার গণমানুষ, রাজনীতিবিদ এবং সবরকম মানুষের আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু আজকের দিনটি। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন রুখে দিতে চেয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছে দিতে চেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চার বিষয় না, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস উপলদ্ধির বিষয়। বাঙ্গালী জাতিসত্বায় যা যা মহৎ কিছু অর্জন হয়েছে তার মূলে যে মানুষটি রয়েছে তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।

সম্মানিত আলোচক জনাব ম. হামিদ বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। জাতির পিতার সঠিক নেতৃত্বে সংঘবদ্ধভাবে আমরা শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলের। 

অধ্যাপক শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাঙালী জাতির জন্য এমন একটি দিন, যে দিন পাকিস্তানি দস্যুরা মুখ কালো করে মাটির দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে ছিল। এটা অভূতপূর্ণ এক দৃশ্য। যে বর্বররা একদিন আগেও বাঙলার নিরীহ মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞ, অত্যাচার চালিয়েছিল, তারাই আজকে মুক্তিকামী সৈনিকদের কাছে আত্নসমাপন করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।

জনাব শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন গণতন্ত্রকে। তিনি গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সারাজীবন লড়াই করেছেন। বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না। নব্বই হাজার সৈন্য নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা আত্নসমর্পন করে, এই যে বিজয়। এটা বিশ্বের ইতিহাসে এক বর্ণাঢ্য বিজয়। বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান তৈরি করেছেন, সেটা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংবিধানগুলোর মধ্যে একটি।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, আজকের দিনটা আমাদের অতি আনন্দের দিন, বিজয়ের দিন। কিন্তু এর পেছনে আছে আমাদের বেদনার ইতিহাস। পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়েই একাত্তরে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দীর্ঘ ৪৮ বছর পরও বিজয়ের সেই আনন্দের এতটুকু কমতি নেই।

অনুষ্ঠানের আলোচনা শেষে বিজয়ের গান পরিবেশন করে শিল্পী তিমির নন্দী এবং শিল্পী দেবলীনা সুর। শিল্পীরা বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ, বাংলার মাটি বাংলার জল, আমি বাংলায় গান গাই গানের মত জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন। শ্রোতারা বিমোহিত হয়ে গান উপভোগ করেন।