বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং ইসমাইল-সুজুকি আর্ট গ্যালারির যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে শিল্পী ইসমাইল চৌধুরীর রিদম অব ন্যাচার শিরোনামে শিল্পীর ৪৩তম একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনীটি চলবে ২৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফোকলোরবিদ, বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রধান এটাচি মি. মাচিকো ইয়ামামুরা এবং বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী। প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প সমালোচক ও লেখক অধ্যাপক মঈনুদ্দিন খালেদ। চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মো. রিয়াজ আহম্মদ।
স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব জনাব মো. আবদুল মজিদ বলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সবসময় দেশের বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজ আয়োজন করেছে শিল্পী ইসমাইল চৌধুরীর একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। তিনি তাঁর ছবিতে প্রকৃতির ছন্দ, প্রকৃতির রং অসাধারণ ভাবে চিত্রায়ন করেছেন তাঁর চিত্রকর্মের মাধ্যমে।
প্রধান আলোচক অধ্যাপক মঈনুদ্দিন খালেদ বলেন প্রকৃতির মুগ্ধতার সাথে আণুবীক্ষণিক পর্যালোচনার নিখুঁত সম্পর্ক তুলে ধরেছেন শিল্পী তাঁর শিল্পকর্মে। তাঁর ছবিতে আছে হিলিস্ক্যাপ, আছে কোষ বিভাজন। যেগুলো আমরা সচারচর দেখি না। তাঁর ছবির ভাষা পড়তে সময় লাগে, গাম্ভীর্যটা আছে তাঁর কর্মে। এক অন্যরকম সুখের পরশ আছে তাঁর ছবিতে।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে এটাচি মি. মাচিকো ইয়ামামুরা বলেন অনেক শুভকামনা ও অনেক অভিনন্দন শিল্পী ইসমাইল চৌধুরীকে তাঁর এই অসাধারণ প্রচেষ্টার জন্য। তিনি সুজুকি কে পড়াশুনা করেছেন। সুজুকি অত্যন্ত সুন্দর একটা শহর। আমার জন্মও সুজুকিতে। ইসমাইল চৌধুরী নিপুণ দক্ষটার সাথে প্রকৃতিকে তুলে ধরেছেন।
শিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী বলেন শিল্পী তাঁর ক্যানভাসে প্রকৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন; প্রত্যেকটা ছবি কথা বলে। ছবির ভাষা যখন সবাই বুঝতে পারে তখনই শিল্পীর সার্থকতা আসে। আমি লক্ষ্য করেছি, প্রাচ্যের আবহাওয়া পুরোপুরি শিল্পী তাঁর চিত্রকর্মে ফুটিয়ে তুলেছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন আজকের এই প্রদর্শনী অনেক বেশি আলোকিত হয়েছে বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রধান এটাচি মি. মাচিকো ইয়ামামুরা উপস্থিত হয়েছেন বলে। খুবই আকর্ষণীয় আজকের এই প্রদর্শনী। শৈল্পিক অর্থের ব্যপকতা মুগ্ধ করেছে আমাকে। প্রকৃতির কথা ছবিগুলোতে এমন ভাবে তিনি তুলে ধরেছেন, মনে হচ্ছে যেন ছবি কথা বলছে, বুকের ভেতরে স্নিগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে জনাব মো. রিয়াজ আহম্মদ বলেন ইসমাইল-সুজুকি আর্ট গ্যালারির সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রকৃতি নিয়ে ভিন্নমাত্রিক চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। একজন শিল্পী কথা বলে তাঁর চিত্রকর্মে। ছবির ভাষা বুঝতে হলে আমাদেরকে গভীর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। মূলত: শিল্পীর প্রকৃতি নিয়ে উপলব্ধি তুলে ধরেছেন তাঁর চিত্রকর্মে, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে।