Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১০ August ২০১৯

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ১০৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘জাদুঘর সভ্যতার স্মৃতিঘর’ শীর্ষক সেমিনার।


প্রকাশন তারিখ : 2019-08-07

    

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ১০৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জাদুঘর সভ্যতার স্মৃতিঘর শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ, এমপি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাদুঘরের ই-টিকিটিং ব্যবস্থার উদ্ভোধন এবং জাদুঘরের নিয়মিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা জাদুঘর সমাচার এপ্রিল-জুন ২০১৯ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এনডিসি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট জাদুঘরবিদ ড. এনামুল হক এবং বিশিষ্ট ফোকলোরবিদ অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মো. রিয়াজ আহম্মদ। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. আবদুল মজিদ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, জাদুঘর হচ্ছে এমন একটি ঘর, যে ঘরে পুরাতত্ব, বিজ্ঞান, শিল্পকলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয়। বিভিন্ন প্রকারের জাদুঘর আছে। যেমন শিল্প জাদুঘর, শিশুতোষ জাদুঘর, ইতিহাস জাদুঘর, ঐতিহাসিক ভবনসমূহ, সামরিক জাদুঘর, আর্ট সেন্টার ইত্যাদি । বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ২০, মার্চ, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ৭ আগস্ট, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর তারিখে এটিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দেয়া হয়। অল্প কিছু নিদর্শন নিয়ে ব্রিটিশদের সচিবালয়ের ছোট একটি ঘরে ঢাকা জাদুঘর নামে যে প্রতিষ্ঠানটির পথচলা শুরু করেছিল আজ সেই প্রতিষ্ঠানটিই এই উপমহাদেশের বৃহত্তর জাদুঘর। যা আমাদের গর্বের আত্মমর্যাদার বিষয়।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ড. এনামুল হক বলেন, জাদুঘরকে জাদুঘর সভ্যতার স্মৃতিঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব আমাদের। আমাদেরকে চারটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলো হলো- সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা এবং প্রকাশনা। একটি জাদুঘর যত বেশি সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা এবং প্রকাশনায় উন্নত হবে, তত বেশি সমৃদ্ধ হবে সেই জাদুঘর।

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, জাদুঘরকে জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বিস্ময়কর নিদর্শন দেখতে আমরা জাদুঘরে আসি এবং দেখার পর যদি মনের ভেতরে বারবার অনুরণিত হয়, তাহলেই জাদুঘরের উদ্দেশ্য সার্থক হবে বলে আমি মনে করি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে. এম. খালিদ এমপি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজ ১০৬ বছর পূর্ণ করল। আজকের এই জাদুঘরের মুলে যার অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন নলিনীকান্ত ভট্টশালী। এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রয়েছে অসামান্য অবদান। ঢাকা জাদুঘরকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর হিসেবে অনুমোদন দেন। জাদুঘরে লক্ষ নিদর্শনের মধ্যে মাত্র অল্প কিছু নিদর্শনই প্রদর্শন করা হয়েছে। বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আরো বেশি নিদর্শন প্রদর্শন করা সম্ভব হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি বলেন, জাদুঘর হচ্ছে সারা বাংলাদেশের মানুষের। একটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সভ্যতার ধারক ও বাহক। এটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। আমাদের সন্তানদের আমাদের গৌরব গাথাকে জানানোর কাজটি করতে পারবে একমাত্র জাদুঘর। বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অবশ্যই আমাদের জানতে হবে আড়াই হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস। কারণ সামনে আগাতে হলে আমাদেরকে পেছন ফিরে তাকাতে হবে। 

সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মো. রিয়াজ আহম্মদ বলেন, আমরা সর্বদা জাদুঘরের জন্য কাজ করে চলছি। জাদুঘরকে আধনিকায়ন করার জন্য লক্ষ্যে আজ ই-টিকিটিং ব্যবস্থার উদ্ভোধন করা হল। জাদুঘর আমাদের সবার, এজন্য জাদুঘরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য।

উপস্থিত সকলকে বিশেষ করে কলেজ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আজকের অনুষ্ঠানটা আরো বেশি সুন্দর করে তোলার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন।