ঢাকা, ১৩ এপ্রিল ২০১৯। ১৪২৫ বঙ্গাব্দের বিদায় এবং ১৪২৬ বঙ্গাব্দেকে বরণ করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর লোকসংগীতানুষ্ঠান এবং পিঠা ও কারুশিল্প মেলার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন গন গ্রন্থগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার। সভাপতিত্ব করেন এবং জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে অস্থায়ী মঞ্চে লোকসংগীতানুষ্ঠান এবং জাদুঘর ভবনের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে পিঠা এবং কারুশিল্প মেলা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান।
স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর তার নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশেষ দিবস গুলোতে বিশেষ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলা নববর্ষকে বরণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজকে আয়োজন করেছে লোকসংগীতানুষ্ঠান এবং পিঠা ও কারুশিল্প মেলা। তিনি আরও বলেন পহেলা বৈশাখ হচ্ছে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে বাঙ্গালির একটি প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেক দেশর মানুষই তাদের নিজ নিজ নববর্ষকে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে বরণ করে নেয়। তেমনি বাংলাদেশের মানুষও বাংলা সালের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখকে ব্যাপক আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্যাপন করছে। আজকের এই আয়োজন আরো বর্ণিল করে তুলবে জনপ্রিয় বাউল সংগীত শিল্পী ফকির শাহবুদ্দিন, কলকাতার বিখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ঋদ্ধি বন্দোপ্যাধায় এবং লালনসংগীত শিল্পী মৌসুমি সিদ্দিকি সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে আশীষ কুমার সরকার বলেন, পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে আহব্বান করার আকাংখা থেকেই পালিত হয়ে আসছে বর্ষবরণ-উৎসব। নতুন সম্ভাবনার প্রত্যাশায় নতুনকে বরণ করার এই রীতি বাঙালি জাতীয়তাবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পহেলা বৈশাখের উৎসব আয়োজনের মধ্যে বাঙালির হাজার বছরের লালিত ঐতিহ্য প্রতিফলিত হয়। আসুন ১৪২৬ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখের এই দিনে বিগত বৎসরের সকল হীনতা, ক্লীবতা, সংকীর্ণতা-ক্ষুদ্রতা ও জরাজীর্ণকে অপনোদন করে বৃহত্তর জীবনের ডাকে সাড়া দেই, শান্ দেই আমাদের চেতনায়- জীর্ণতা হোক অপসৃত, আলো হোক অবারিত।
উদ্বোধনী বক্তেব্য সভাপতির শিল্পী হাশেম খান বলেন, যে কয়টি সর্বজনীন উৎসবের মাঝে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটে, এর অন্যতম হলো পহেলা বৈশাখ। এর রূপ-রস-ছন্দে বাঙালি জীবন যেন নব থেকে নবতর হয়ে উঠে। বাঙালির যে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে তা ধারণ করে জীর্ণ পুরাতনকে সরিয়ে নতুন সত্তায় জাগ্রত হয়ে নবজাগরণ, পরিবর্তমান-সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জীর্ণ-পুরাতনকে সরিয়ে নতুন সত্তায় জাগ্রত হওয়ার উৎস সন্ধানের মাধ্যমে সোনালী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণায় পহেলা বৈশাখ। গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, আবাংলাদেশ বিনির্মাণের চেতনায় উজ্জ্বীবিত হয়ে বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় হোক এবারের পহেলা বৈশাখের আবেদন।