বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
শাহবাগ, ঢাকা-১০০০
শিল্পকর্ম সংগ্রহ নীতিমালা
সংজ্ঞা: শিল্পকর্ম বলতে পেইন্টিং/চিত্রকলা, ভাস্কর্য, সিরামিক, কারুশিল্প (ট্যাপেস্ট্রি ও অন্যান্য মাধ্যমের) শিল্পকলার অন্য যে কোন মাধ্যম বুঝাবে।
(১) শিল্পকর্ম সৃষ্টির প্রারম্ভকাল থেকে শুরু করে বর্তমান কাল পর্যন্ত সকল ধরনের শিল্পকর্ম সংগ্রহে ‘বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর’ উদ্যোগ গ্রহণ করবে। বিশেষতঃ সমকালীন শিল্পকলা সংগ্রহের পক্ষে উপযুক্ত ভূমিকা গ্রহণ করবে।
(২) শিল্পকর্মের গুরুত্ব অনুসারে তিনটি বৃহৎ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রাচীন, মধ্যযুগ ও আধুনিক কাল বা সমকালীন শিল্পকলা।
(৩) দেশে ও দেশের বাইরের প্রথিতযশা ও খ্যাতিমান এবং তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের শিল্পকর্ম বিবেচ্য হবে।
(৪) একজন শিল্পীর একটি শিল্পকর্ম সংগ্রহ করা যাবে। তবে যদি বিশেষ মানসম্পন্ন কোন কাজ হয় সেক্ষেত্রে একাধিক শিল্পকর্ম নেয়া যেতে পারে।
(৫) বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শিল্পকর্ম ক্রয়, উপহার বা দান, সংগ্রহ, ঋণ বা বিনিময়ের মাধ্যমে নিজস্ব সংগ্রহ ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে পারবে।
(৬) এমন কোন শিল্পকর্ম সংগ্রহ করা যাবে না যা অন্য কোন জাদুঘর বা শিল্পীর কাছ থেকে চুরি হয়েছে। যদি এমন কোন নিদর্শন ভুলবশতঃ বা অজ্ঞতাবশতঃ সংগৃহীত হয় তাহলে তা উপযুক্ত যাচাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট জাদুঘরকে ফেরত দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি এরূপ নিদর্শন জাদুঘরকে সংগ্রহের জন্য দিবেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
(৭) শিল্পকর্ম সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হবে
(ক) কোন শিল্পীর আঁকা ছবি;
(খ) কি ছবি;
(গ) মাধ্যম ইত্যাদি।
(৮) যেসব মাধ্যমের শিল্পকর্ম সংগ্রহ করা যাবেঃ
(ক) চিত্রকলা (যে কোন মাধ্যম)
(খ) ভাস্কর্য;
(গ) সিরামিক;
(ঘ) কারুশিল্প (বিভিন্ন মাধ্যম);
(ঙ) শিল্পকলার অন্য যে কোন মাধ্যম।
(৯) শিল্পকর্ম সংগ্রহের ক্ষেত্রে নিম্নের শিল্পীদের অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারেঃ
(ক) স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত শিল্পীদের শিল্পকর্ম ।
(খ) ২১ শে পদক প্রাপ্ত শিল্পীদের শিল্পকর্ম ।
(গ) এশিয়ান বাইওনিয়াল পদক প্রাপ্ত শিল্পীদের শিল্পকর্ম।
(ঘ) শিল্পকলায় বিশেষ পদক প্রাপ্ত শিল্পীদের শিল্পকর্ম ।
(ঙ) আমত্মর্জাতিক/জাতীয়ভাবে আয়োজিত কোন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার প্রাপ্ত/শিল্পীদের শিল্পকর্ম ইত্যাদি।
(১০) শিল্পকর্ম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজন্মের খ্যাতিমান শিল্পীদের শিল্পকর্ম বিবেচনায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজন্মের শিল্পীদের হালনাগাদ তালিকা করতে হবে।
(১১) কোন্ কোন্ শিল্পীর শিল্পকর্ম জাদুঘরের সংগ্রহে আছে শিল্পকর্ম সংগ্রহের ক্ষেত্রে তা বিবেচনায় আনতে হবে।
(১২) অস্থায়ী বা স্থায়ী ঋণ হিসেবে কোন শিল্পকর্ম পাওয়া গেলে এর সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর গ্রহণ করবে এবং ঋণদাতা বা প্রতিষ্ঠানের সৌজন্য স্বীকার করবে। প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ঋণদাতার নাম উল্লেখ করা যাবে। এ ব্যাপারে ঋণ প্রদানকারীর কোন শর্ত আরোপের অধিকার থাকবে না।
(১৩) স্বল্পমেয়াদী ঋণের মেয়াদকাল সর্বনিম্ন ৭(সাত) দিন এবং সর্বোচ্চ ৫(পাঁচ) বছর পর্যমত্ম হতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ সর্বনিম্ন ২০(বিশ) বছর এবং সর্বোচ্চ ২৫(পঁচিশ) বছর এবং স্থায়ী ঋণের মেয়াদকাল ৯৯(নিরানববই) বছর কিংবা তদুর্ধ সময়ের হতে পারে। স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাগণ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নিদর্শনটি জাদুঘরে সংগ্রহের উপযুক্ততা যাচাই করে মতামত প্রদান করবেন।
(১৪) ঋণের মেয়াদ শেষ হবার পাঁচ বছরের মধ্যে ঋণ প্রদানকারী নিদর্শনটি ফেরত গ্রহণে অসমর্থ হলে অথবা নিদর্শনটি জাদুঘরে অতিরিক্ত সময়ের জন্য রাখার জন্য লিখিতভাবে অনুমতি নিতে ব্যর্থ হলে নিদর্শনটি আপনা আপনি জাদুঘরের সম্পত্তিতে পরিণত হবে।
(১৫) ঋণ প্রদানকারী ঋণ প্রদানের সময় নির্দিষ্ট ফরমে তাঁর মৃত্যুর পর নিদর্শনটি ফেরত গ্রহণের জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যমত্ম তিনজন উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যেতে পারবেন। তবে ঋণ প্রদানকারী জীবিত থাকলে অন্য কেউ তা গ্রহণ করতে পারবেন না।
(১৬) যেহেতু মেয়াদকাল শেষ না হলে নিদর্শন ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং ঋণদাতা ইচ্ছা করলে ঋণের মেয়াদ শেষ হবার পূর্বেই নিদর্শনটি ঋণগ্রহীতা জাদুঘরের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে জাদুঘরের সামর্থ ও ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। জাদুঘর প্রস্তাবটি নাকচ করারও অধিকার সংরক্ষণ করে।
(১৭) উপহার বা দান হিসেবে কোন শিল্পকর্ম কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজে বা তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে জাদুঘরকে উপহার দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে মূল উপহারদাতার সৌজন্য স্বীকার করা হবে।
(১৮) কোন শিল্পকর্ম ধার বা ঋণ দেয়ার বা নেয়ার বিষয়সহ এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর নিদর্শন সংগ্রহ কমিটি প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।